শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য কি সেই বিষয়ে স্বামীজীর এক চিঠি

শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য।

শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য কি সেই বিষয়ে স্বামীজীর এক চিঠি
শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য কি সেই বিষয়ে স্বামীজীর এক চিঠি

এ বিষয়ে একখানি পত্রে শ্রীবিবেকানন্দের ইঙ্গিত এইরূপ—

‘শ্রীরামকৃষ্ণ জীবন একটা মহাসমম্বয়পূর্ণ কাব্য।

তাঁর ভক্ত—গৃহস্থ ও সাধুদের মধ্যে প্রত্যেকে ব্যক্তিগত ভাবে সেই আদর্শে পূর্ণতা লাভ করতে না পারলেও,

তারা এক একজন জীবনে শ্রীরামকৃষ্ণের এক এক ভাবের বিকাশ কোরে,

এমন একটা সংহতি গগড়ে তুলতে পারে যাতে একঘেয়ে ভাবটা দূর হয়ে যেন সর্ব জীবন মিলে একটা গােটা পূর্ণ জীবন প্রস্ফুটিত হয়।

এক ব্যক্তিতে যেটা অভাব,

সেটা অপর ব্যক্তির জীবনের দ্বারা পূর্ণ হয়ে উঠুক।

এতে ব্যক্তিগত জীবনে সমম্বয় অস্পষ্ট হলেও,

সমষ্টিগত জীবনে সমন্বয়টী পরিস্ফুট হয়ে পড়বে।

এই প্রাপ্ত সমন্বয়টী,

প্রচলিত যাবতীয় একদেশী ধর্মমত হতে একটা সুনিশ্চিত উন্নতির সােপান শ্রেণীতে নির্দিষ্ট—

এ বিষয়ে আর কোন সন্দেহ থাকবে না।

শ্রীভগবান যদিও সর্বভূতে বর্তমান,

তথাপি তাকে আমরা জানতে পারি কেবল মনুষ্য-প্রতীকের মধ্য দিয়ে।

যেমন শ্রীরামকৃষ্ণ

তাঁর মতো এত উন্নত চরিত্রের ও সমম্বয়ের আদর্শ-প্রতীক কোন কালে কোন মহাপুরুষের মধ্যে আমরা পাই না।

সুতরাং শ্রীরামকৃষ্ণপদানুগ ভক্তমণ্ডলীর—সাধু ও গৃহস্থদের,

তাকেই কেন্দ্র স্বরূপে ধরে থাকা উচিত। 

শ্রীরামকৃষ্ণ-একজন লেবাসবিহীন সাধু

পরমাশান্তি লাভ কোরে সর্বদা মৌনী ভাবে অবস্থান কর

শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য কি সেই বিষয়ে স্বামীজীর এক চিঠি
শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য কি সেই বিষয়ে স্বামীজীর এক চিঠি

“গুরু, বাবা ও কর্তা — এই তিন কথায় আমার গায়ে কাঁটা বেঁধে। আমি তাঁর ছেলে, চিরকাল বালক, আমি আবার ‘বাবা’ কি? ঈশ্বর কর্তা আমি অকর্তা; তিনি যন্ত্ৰী, আমি যন্ত্র।

যদি কেউ আমায় গুরু বলে,

আমি বলি, ‘দূর শালা।

গুরু কিরে?

এক সচ্চিদানন্দ বই আর গুরু নাই।

তিনি  বিনা কোন উপায় নাই।

তিনিই একমাত্র ভবসাগরের কাণ্ডারী।

শ্রীরামকৃষ্ণ(বিজয়ের প্রতি) — “আচার্যগিরি করা বড় কঠিন।

ওতে নিজের হানি হয়।

অমনি দশজন মানছে দেখে,

পায়ের উপর পা দিয়ে বলে,

আমি বলছি আর তােমরা শুন’।

এই ভাবটা বড় খারাপ।

তার ওই পর্যন্ত।

ওই একটু মান;

লােকে হদ্দ বলবে,

আহা বিজয়বাবু বেশ বললেন,

লােকটা খুব জ্ঞানী।

আমি বলছি এ-জ্ঞান করাে না।

আমি মাকে বলি,

শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য কি সেই বিষয়ে স্বামীজীর এক চিঠি
শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য কি সেই বিষয়ে স্বামীজীর এক চিঠি

“মা তুমি যন্ত্রী, আমি যন্ত্র; যেমন করাও তেমনি করি; যেমন বলাও তেমনি বলি।”

বিজয় (বিনীতভাবে) — আপনি বলুন,

তবে আমি গিয়ে বসব।

শ্রীরামকৃষ্ণ (হাসিতে হাসিতে) — আমি কি বলব;

চাঁদা মামা সকলের মামা।

তুমিই তাঁকে বল।

যদি আন্তরিক হয়,

কোন ভয় নাই।

বিজয় আবার অনুনয় করাতে শ্রীরামকৃষ্ণ বলিলেন,

“যাও, যেমন পদ্ধতি আছে তেমনি করগে; আন্তরিক তাঁর। উপর ভক্তি থাকলেই হল।”

বিজয় বেদীতে আসীন হইয়া ব্রাহ্মসমাজের পদ্ধতি অনুসারে উপাসনা করিতেছেন।

বিজয় প্রার্থনার সময় মা মা করিয়া ডাকিতেছেন।

সকলেরই মন দ্রবীভূত হইল।

উপাসনান্তে ভক্তদের সেবার জন্য ভােজনের আয়ােজন হইতেছে।

  • সতরঞ্চি,
  • গালিচা

সমস্ত উঠাইয়া পাতা হইতে লাগিল,

ভক্তেরা সকলেই বসিলেন।

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের আসন হইল।

তিনি বসিয়া শ্ৰীযুক্ত বেণী পাল প্রদত্ত উপাদেয়

  • লুচি,
  • কচুরি,
  • পাঁপর,
  • নানবিধ মিষ্টান্ন,
  • দধি,
  • ক্ষীর

ইত্যাদি সমস্ত ভগবানকে নিবেদন করিয়া আনন্দে প্রসাদ লইলেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের উদ্দেশ্য কি সেই বিষয়ে স্বামীজীর এক চিঠি

 

Leave a Comment