ব্রাহ্মসমাজ
![ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে ব্রাহ্মসমাজ ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য বর্ণনা](https://www.medlinepluss.uk/wp-content/uploads/2020/11/ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে-ব্রাহ্মসমাজ-ও-ঈশ্বরের-ঐশ্বর্য-বর্ণনা-min.jpg)
ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে — ব্রাহ্মসমাজ ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য বর্ণনা
শ্রীরামকৃষ্ণ — ডুব দাও।
ঈশ্বরকে ভালবাসতে শেখ।
তাঁর প্রেমে মগ্ন হও।
দেখ, তােমাদের উপাসনা শুনেছি।
কিন্তু তােমাদের ব্রাহ্মসমাজে ঈশ্বরের ঐশ্বর্য অত বর্ণনা কর কেন?
“হে ঈশ্বর, তুমি আকাশ করিয়াছ; বড় বড় সমুদ্র করিয়াছ, চন্দ্রলােক, সূর্যলােক, নক্ষত্রলােক, সব করিয়াছ”
— এ-সব কথায় আমাদের অত কাজ কি?
“সব লােক বাবুর বাগান দেখে অবাক্ —
- কেমন গাছ,
- কেমন ফুল,
- কেমন ঝিল।
কেমন বৈঠকখানা, কেমন তার ভিতর ছবি —
এই সব দেখেই অবা।
কিন্তু কই,
বাগানের মালিক যে বাবু তাঁকে খোঁজে ক’জন?
বাবুকে খোঁজে দু-একজনা।
ঈশ্বরকে ব্যাকুল হয়ে খুঁজলে তাঁকে দর্শন হয়,
তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়, কথা হয়;
যেমন, আমি তােমাদের সঙ্গে কথা কচ্ছি।
“এ-কথা কারেই বা বলছি — কে বা বিশ্বাস করে।”
ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে ব্রাহ্মসমাজ ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য বর্ণনা
[ শাস্ত্র না প্রত্যক্ষ — The Law of Revelation]
“শাস্ত্রের ভিতর কি ঈশ্বরকে পাওয়া যায়?
শাস্ত্র পড়ে হদ্দ অস্তিমাত্র বােধ হয়।
কিন্তু নিজে ডুব না দিলে ঈশ্বর দেখা দেন না।
ডুব দেবার পর তিনি নিজে জানিয়ে দিলে তবে সন্দেহ দূর হয়।
বই হাজার পড়,
মুখে হাজার শ্লোক বল,
ব্যাকুল হয়ে তাঁতে ডুব না দিলে তাঁকে ধরতে পারবে না।
শুধু পাণ্ডিত্যে মানুষকে ভােলাতে পারবে,
কিন্তু তাঁকে পারবে না।
“শাস্ত্র, বই শুধু এ-সব তাতে কি হবে?
তাঁর কৃপা না হলে কিছু হবে না;
যাতে তাঁর কৃপা হয়,
ব্যাকুল হয়ে তার চেষ্টা করাে;
কৃপা হলে তাঁর দর্শন হবে।
তিনি তােমাদের সঙ্গে কথা কইবেন।”
![ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে ব্রাহ্মসমাজ ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য বর্ণনা](https://www.medlinepluss.uk/wp-content/uploads/2020/11/ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে-ব্রাহ্মসমাজ-ও-ঈশ্বরের-ঐশ্বর্য-বর্ণনা3-min-300x300.jpg)
| | সংকীর্ণ ধর্ম । |
শ্রী রবীনন্দ্রনাথের ধর্ম সম্বন্ধে আলােচনা হচ্ছে—বিষয়টা গোঁড়াদের সম্বন্ধে ।
—কবি বলছেন যে,
একটা বিশেষ গণ্ডি একে,
একটা বিশেষ সীমার মধ্যে এরা ধর্মকে কারারুদ্ধ করে রাখতে চায়।
তখন ধর্ম হয় কয়েকটা বিশেষ দিনের,
কোন একটা বিশেষ স্থানের বা কোন একটা বিশেষ প্রণালীর।
তার একটু এদিক ওদিক হলেই মহা হুলুস্থুল পড়ে যাবে।
গোঁড়ারা যেরূপ প্রচণ্ড উৎসাহে স্বরচিত শ্বাসরােধকারী গণ্ডি রক্ষা করার চেষ্টা করে,
একটা ঘােতর বিষয়ীও র জমির সীমানা অত উৎসাহে অত সতর্কিতভাবে রক্ষা করার চেষ্টা করে না।
তাদের এই গণ্ডি রক্ষাই ধর্ম।
তারা বলে, বিজ্ঞান ততক্ষণ সত্য,
যতক্ষণ তা তাদের গণ্ডিতে হাত না দেয়।
এদের ধর্মবৃন্তটী এত দুর্বল যে দক্ষিণে হাওয়ার সুখ-স্পর্শকেও এর শত্রু বলে জ্ঞান করে।
এর কারণ ধর্মের বাস্তবরূপ না থাকা,
—ধর্মের আচরণ আছে, কিন্তু, সফল নেই,
অর্থাৎ অন্তরের সত্যজ্ঞানানন্দের অনুভূতি নেই।
* * একবার ঠাকুর নিজের ফটো দেখিয়ে আমাকে বললেন,
“দেখ এর ভিতর আমি রয়েছি। একে ধ্যান করবি।”
আমিও স্বীকার করলাম যে ধ্যান করব।
ঠাকুরের এ ছবিতে সব আছে।
তাঁর ছবি ষটচক্রভেদের মূর্তি।
তাঁর ঐ ভাবঘন মূর্তির দিকে তাকালে মনে হয় তিনি সব চক্রগুলি ভেদ করে আনন্দসাগরে ডুবে রয়েছেন।
আমি ঐ ছবিতে নানা জিনিস দেখতে পাই।
যে যত পবিত্র হবে, ঠাকুর তাঁর কাছে ততই প্রকাশিত হবেন। * *
— স্বামী বিজ্ঞানানন্দ
ওঁ নমঃ শ্রীভগবতে রামকৃষ্ণায় নমাে নমঃ
প্রাচীন সাধুদের কথা_স্বামী অপূর্বানন্দ