ঈশ্বরের বৈষম্যদোষ তাঁর কৃপা কি একজনের উপর বেশি একজনের উপর কম?

[ব্রাক্ষসমাজ সামঈশ্বরের বৈষম্যদোষ

ব্রাক্ষসমাজ ও সাম -- ঈশ্বরের বৈষম্যদোষ।
ব্রাক্ষসমাজ ও সাম — ঈশ্বরের বৈষম্যদোষ।

সদরওয়ালা — মহাশয়,

ঈশ্বরের বৈষম্যদোষতাঁর কৃপা কি একজনের উপর বেশি আর-একজনের উপর কম?

তাহলে যে ঈশ্বরের বৈষম্যদোষ হয়।

শ্রীরামকৃষ্ণ — সে কি! ঘােড়াটাও টা আর সরাটাও টা!

তুমি যা বলছ ঈশ্বর বিদ্যাসাগর ওই কথা বলেছিল।  

বলেছিল,

মহাশয়,

তিনি কি কারুকে বেশি শক্তি দিয়েছেন,

কারুকে কম শক্তি দিয়েছেন?

আমি বললাম,

বিভুরূপে তিনি সকলের ভিতর আছেন

 — আমার ভিতরে যেমনি পিপড়েটির ভিতরেও তেমনি।

 কিন্তু শক্তিবিশেষ আছে।

যদি সকলেই সমান হবে,

তবে ঈশ্বর বিদ্যাসাগর নাম শুনে তােমায় আমরা কেন দেখতে এসেছি।

তােমার কি দুটো শিং বেরিয়েছে!

ব্রাক্ষসমাজ ও সাম -- ঈশ্বরের বৈষম্যদোষ।
ব্রাক্ষসমাজ ও সাম — ঈশ্বরের বৈষম্যদোষ।

তা নয়,

  • তুমি দয়ালু,
  • তুমি পণ্ডিত

— এই সব গুণ তােমার অপরের চেয়ে বেশি আছে,

তাই তােমার এত নাম।

দেখ না এমন লােক আছে যে,

একলা একশাে লােককে হারাতে পারে;

আবার এমন আছে,

একজনের ভয় পালায়।

“যদি শক্তিবিশেষ না হয় লােকে কেশবকে এত মানতাে কেন? গীতায় আছে, যাকে অনেকে গণে-মানে – তা বিদ্যার জন্যই হউক, বা গান-বাজনার জন্যই হউক, বা লেকচার দেবার জন্যই হউক, বা আর কিছুর জন্যই হউক – নিশ্চিত জেনাে যে, তাতে ঈশ্বরের বিশেষ শক্তি আছে।”

ব্রাহ্মভক্ত (সদরওয়ালার প্রতি) — যা বলছেন মেনে নেন না!

শ্রীরামকৃষ্ণ (ব্রাহ্মভক্তের প্রতি) –তুমি কিরকম লােক!

কথায় বিশ্বাস না করে শুধু মেনে লওয়া! কপটতা!

তুমি ঢঙ কাচ দেখছি।

ব্রাহ্মভক্তটি অতিশয় লজ্জিত হইলেন।

ব্রাক্ষসমাজ সামঈশ্বরের বৈষম্যদোষ

ব্রাক্ষসমাজ ও সাম -- ঈশ্বরের বৈষম্যদোষ।
ব্রাক্ষসমাজ ও সাম — ঈশ্বরের বৈষম্যদোষ।

শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকা _পুস্পাঞ্জলি

ক্রীং এষ সচন্দনপুস্পাঞ্জলিঃ সাঙ্গায়ৈ সাবরণায়ৈ সায়ুধায়ৈ সপরিবারায়ৈ সবাহনায়ৈ মহাকালভৈরবসহিতায়ৈ শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকায়ৈ বৌষ মন্ত্রে

  • মায়ের মস্তকে,
  • হৃদয়ে,
  • মূলাধারে,
  • পাদপদ্মে
  • সর্বাঙ্গে এক এক

করিয়া পঞ্চপুস্পাঞ্জলি প্রদান করিবে।।

শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকা _প্রণামশ্রীমৎসুরাসুরারাধ্যচরণাম্বুরুদ্বয়াম

চরাচরজগদ্ধাত্রীং কালিকাং প্রণমাম্যহম্।

 

শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকা_ বন্দনা– (করজোড়ে পাঠ) –

ওঁ মহামায়ে জগন্মাতঃ কালিকে ঘােরদক্ষিণে।

গৃহাণবন্দনং দেবি নমস্তেপরমেশ্বরি।।

ওঁ গৃহাণ বন্দনং মাতঃ সদা বিজয়বধিনি।

পাদপদ্মং সদাবন্দে স্থানং দেহি পদাম্বুজে।।

শ্রীমদ্দক্ষিণকালিকা_ প্রণাম

ওঁ কালি কালি মহাকালি কালিকে পাপহারিকে।

ধর্মার্থমােক্ষসম্পত্তিং দেহি দেবি নমােহস্তুতে।।

শ্রীশ্রীমায়ের দীক্ষিত সন্তান_শ্রীনলিনীকান্ত বসু

ব্রাহ্মভক্তসঙ্গে ব্রাহ্মসমাজ ও ঈশ্বরের ঐশ্বর্য বর্ণনা

 

কালীতত্ত্ব বােঝার সুবিধার জন্য এবার মায়ের রূপের বর্ণনাটি তথা তাৎপর্যগুলি প্রশ্নউত্তরের আকারে লেখা হল

মা ভবতারিণীরূপী মহাকালিকা চতুর্ভুজা কেন?

 মায়ের উপরের ডান হাত হল অভয় মুদ্রা এবং নিচের ডান হাত হল বর মুদ্রা ধারণকারিণী।

অভয়মুদ্রা ধর্মের প্রতীক।

  • একমাত্র সত্য,
  • অহিংসা,
  • প্রেমরূপ মহাধর্মই মানুষকে অভয়প্রদান করে।

কিনা ধর্মই অভয়ের প্রতীক।

যিনি ধর্মপালন করেন,

ধর্ম তাকে প্রতি পদে পদে রক্ষা করে।

মাকে মনে-প্রাণে আশ্রয় করে থাকলে ধর্ম সন্তানের অন্তরের বাসা বাঁধে।

অপরদিকে বরমুদ্রা হল মায়ের দয়া তথা কৃপার প্রতীক।

মা সকাম ভক্তকে মনােমত বর প্রদান করেন।

কল্পতরু মা তার ভক্ত-সন্তানকে দারুনভাবে জীবনের প্রতি পদে পদে অভয় ও বর প্রদান করেন।

তবে কেউ যদি মাকেই চেয়ে বসেন,

তাহলে কি হবে?

তাহলে ভক্ত-সন্তানকে সর্বদা মায়ের শরণাগত হয়ে থাকতে হবে।

মাতৃপরায়ণ হয়ে মাকে দেখার জন্য আকুলভাবে প্রার্থনা করতে হবে।

সর্বতােভাবে এক মাতৃ ভাবনাময় হয়ে আমি আমার ত্যাগ করলেই সময়ে মায়ের কৃপায় তার দর্শন পাওয়া সম্ভব হয়।

অপরদিকে মায়ের ওপরের বাম হাতটিতে মা খড়ঙ্গ ধারণ করে রয়েছেন।

এটি জ্ঞানখড়গ।

  • এই জ্ঞানখ দিয়ে ভক্ত-সন্তানের অন্তরের অজ্ঞানের ভাব ছেদন করে
  • মােক্ষলাভের অনুপ্রেরণা দান করেন কিনা
  • মুক্তিলাভের ইচ্ছা বুদ্ধিতে জাগ্রতা করে দেন।

এই জ্ঞানখড়ঙ্গ দিয়ে দেবী অসুরদের মাথা কেটে দেন।

মায়ের বাম হাতের নিচেরটিতে ধরা হয়েছে ছিন্নমুণ্ড।

এটি চণ্ডারূপী কামাসুরের প্রতীক।

এখানে মা ভক্তদের বােঝাচ্ছেন যে,

মনের জগতে বাসা বেঁধে রয়েছে যে শক্তিশালী কাম’ তাকে সমূলে পরাস্ত করতে না পারলে

ভববন্ধন থেকে কিছুতেই মুক্তি পাওয়া যাবে না।

বস্তুত সূক্ষ্মভাবে দেখতে গেলে মায়ের চারটি হাত।

  • ধর্ম,
  • অর্থ,
  • কাম ও
  • মােক্ষের

প্রতীক বলা যায়।

ডানের উপর হাতটি ধর্মের,

নিচেরটা অর্থের,

বামের নিচের কামের এবং উপরেরটা মােক্ষের

 

Leave a Comment